“বড় হয়ে যাওয়ার পরে একটা ব্যাপারে খুব হাসফাঁস লাগে … শৈশব বা কৈশোরে যেমন কষ্ট পেলে কোন রকম চিন্তা ছাড়া কাঁদতে পারতাম, এখন আর ওরকম পারা যায় না !!
দু’ ফোঁটা চোখের জল ফেলার আগে এখন মাথায় অনেক চিন্তা চলে আসে … আমি কি এতই দুর্বল? … লোকে কি বলবে? … বড় হয়ে গেছি, এখন কান্নাকাটির বয়স আছে নাকি?
অথচ কষ্টের তীব্রতা কিন্তু কমে নি, বরং বেড়েছে … কত রকম কষ্ট আশপাশটায় … প্রিয় মানুষটার চলে যাওয়া, আপনজনের মৃত্যু, হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকা চাকরি কিংবা টিউশন না পাওয়া, আর্থিক টানাপোড়েন, ফ্যামিলি প্রবলেম, রেজাল্ট, অসুস্থতা কিংবা ডিপ্রেসন !!
এই প্রত্যেকটা কারণে কাঁদা যায়, কাঁদতে ইচ্ছে হয় … বুকের ভেতরটায় এফোঁড়-ওফোঁড় হয়ে যায় মাঝে মাঝে … আমরা ভাবি, কান্না বোধহয় মানসিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ … কিন্তু আমার কাছে কান্না মানে হালকা হওয়া, কষ্টগুলো উজাড় করে বের করে দেয়া !!
আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, কষ্টগুলো জমাট বেঁধে শক্ত পাথরের মত বুকের ভেতরটায় আটকে থাকে … আমরা যখন কাঁদি, সেই পাথর একটু একটু করে গলে তপ্ত অশ্রু হয়ে গাল বেয়ে নেমে আসে … ধীরে ধীরে কষ্টের ভার কমতে থাকে, আমরা হালকা হই !!
বড় হয়ে যাওয়ার পর মাঝে মাঝে কান্নাগুলো গলায় এসে আটকে যায় … চাইলেও কাঁদা যায় না … কষ্টগুলো জমাট বেঁধে চেপে বসে থাকে ভেতরটায়, চাইলেও হালকা হওয়া যায় না !!
এই পৃথিবীতে যারা এখনো কষ্ট পেলে মন উজাড় করে কাঁদতে পারে, তারাই ভালো আছে … ঝরঝর করে কেঁদে ফেলার সময়টাতে যাদের কাছের মানুষটা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে মাথায় হাত রেখে ফিসফিস করে বলে, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে’, তাদের চেয়ে ভাগ্যবান কিংবা ভাগ্যবতী আর কেউ নেই !!”